ভারতের পূর্ব ও পশ্চিম উপকূলের মধ্যে পার্থক্য | পূর্ব উপকূলীয় সমভূমি এবং পশ্চিম উপকূলীয় সমভূমির মধ্যে পার্থক্য

পূর্ব উপকূলীয় সমভূমি এবং পশ্চিম উপকূলীয় সমভূমির মধ্যে পার্থক্য

এই পোস্টে আমরা জানব:

  • ভারতের পূর্ব ও পশ্চিম উপকূলের মধ্যে পার্থক্য
  • ভারতের পূর্ব উপকূলীয় সমভূমি এবং পশ্চিম উপকূলীয় সমভূমির মধ্যে পার্থক্য
  • পূর্ব উপকূল এবং পশ্চিম উপকূলের মধ্যে পার্থক্য
  • পূর্ব এবং পশ্চিম উপকূলীয় সমভূমির মধ্যে পার্থক্য
  • পূর্ব উপকূলীয় সমভূমির বৈশিষ্ট্য
  • পশ্চিম উপকূলীয় সমভূমির বৈশিষ্ট্য
Difference Between East And West Costal Plains In Bengali


বিষয়

পূর্ব উপকূলীয় সমভূমি

পশ্চিম উপকূলীয় সমভূমি

অবস্থান

পূর্ব উপকূলীয় সমভূমি উত্তরে সুবর্ণরেখা নদী থেকে দক্ষিণে কন্যাকুমারীকা পর্যন্ত বিস্তৃত।

পশ্চিম উপকূলীয় সমভূমি উত্তরে কচ্ছের রণ থেকে দক্ষিণে কন্যাকুমারীকা পর্যন্ত বিস্তৃত।

প্রশস্ত

পূর্ব উপকূলীয় সমভূমি পশ্চিম উপকূলীয় সমভূমির তুলনায় অধিক প্রশস্ত। মোটামুটি পূর্ব উপকূলীয় সমভূমি ১২০-৮০ কিলোমিটার পর্যন্ত বিস্তৃত।

পশ্চিম উপকূলীয় সমভূমি পূর্ব উপকূলীয় সমভূমির তুলনায় কম প্রশস্ত। মোটামুটি পশ্চিম উপকূলীয় সমভূমি ৬০-৮০ কিলোমিটার পর্যন্ত বিস্তৃত।

বদ্বীপের অবস্থান

পূর্ব উপকূলীয় সমভূমিতে যে কটি নদীর মোহনা অবস্থান করে, তাদের বেশিরভাগেরই মোহনাতে বেশ বড় বদ্বীপ সৃষ্টি হয়েছে।

পশ্চিম উপকূলীয় সমভূমি তে যে কয়েকটি নদীর মোহনা অবস্থান করে, তাতে উল্লেখযোগ্য কোন বদ্বীপ গড়ে ওঠেনি। ব্যতিক্রম: নেত্রাবতী নদীর মোহনায় একটি ছোট বদ্বীপ গড়ে উঠেছে।

উৎপত্তি

পূর্ব উপকূলীয় সমভূমি ও সমুদ্রের সঞ্চয় কার্যের ফলে গঠিত হয়েছে।

পশ্চিম উপকূলীয় সমভূমি প্রথম পর্যায়ে আন্দোলন এবং পরবর্তী পর্যায়ে দীর্ঘদিন ধরে সমুদ্রের সঞ্চয়ের ফলে  ধরে গঠিত হয়েছে।

সমুদ্রতল থেকে উচ্চতা

শুধুমাত্র সঞ্চয় কার্যের ফলে গঠিত হওয়া পূর্ব উপকূলীয় সমভূমির উচ্চতা সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে খুব একটা বেশি নয়।

ভূ আন্দোলন এবং সমুদ্রের সঞ্চয় কার্যের ফলে গঠিত হওয়া পশ্চিম উপকূলীয় সমভূমির উচ্চতা পূর্ব উপকূলীয় সমভূমির উচ্চতা অপেক্ষা বেশি

বালিয়াড়ির অবস্থান

পূর্ব উপকূলীয় সমভূমি প্রায় সকল জায়গাতেই জায়গাতেই উঁচু-নিচু বালিয়াড়ি সৃষ্টি হয়েছে।

পশ্চিম উপকূলীয় সমভূমি তে পূর্ব উপকূলীয় সমভূমি অপেক্ষা বালিয়াড়ির সংখ্যা খুবই কম।

ব্যতিক্রম: মালাবার উপকূলে বেশকিছু বালিয়াড়ি দেখা যায়।

যোগাযোগ ব্যবস্থা

পূর্ব উপকূলীয় সমভূমি অধিক প্রশস্ত এবং এখানকার ভূপ্রকৃতি সমতল হওয়াতে এখানকার সর্বত্রই যোগাযোগ ব্যবস্থা বেশ উন্নত।

পশ্চিম উপকূলীয় সমভূমি অপেক্ষাকৃত কম প্রশস্ত এবং এখানকার ভূপ্রকৃতি তুলনামূলকভাবে বেশি বন্ধুর (উঁচু-নিচু)হওয়ার কারণে এখানকার যোগাযোগব্যবস্থা সর্বত্র উন্নত নয়। তবে, মুম্বাই, পানাজি (গোয়ার রাজধানী) ইত্যাদি শহরে যোগাযোগ ব্যবস্থা খুবই উন্নত।

উপকূলের প্রকৃতি

পূর্ব উপকূলীয় সমভূমির উপকূলরেখা তুলনামূলকভাবে কম ভগ্ন।

পশ্চিম উপকূলীয় সমভূমির উপকূল রেখা তুলনামূলকভাবে বেশি ভগ্ন।

বন্দরের সংখ্যা

পূর্ব উপকূলীয় সমভূমির উপকূল রেখা তুলনামূলকভাবে কম ভগ্ন হওয়ায় এখানে স্বাভাবিক বন্দরের সংখ্যা খুবই কম। ব্যতিক্রম: বিশাখাপত্তনম (আমাদের দেশের সর্ববৃহৎ স্বাভাবিক বন্দর)

পশ্চিম উপকূলের সমভূমির উপকূল রেখা তুলনামূলকভাবে বেশি ভগ্ন হওয়ায় এখানে অনেক বেশি স্বাভাবিক বন্দর গড়ে উঠেছে।

উপকূলের দৈর্ঘ্য

পূর্ব উপকূল উত্তর দক্ষিণে মোটামুটিভাবে ১৫০০ (1500) কিলোমিটার দীর্ঘ।

পশ্চিম উপকূল উত্তর দক্ষিণে মোটামুটিভাবে ১৬০০ (1600) কিলোমিটার দীর্ঘ।

কৃষিকাজ ও জনবসতি

পূর্ব উপকূলীয় সমভূমি কৃষিকাজে উন্নত হওয়ায় এখানে সর্বত্রই জনবসতি গড়ে উঠেছে।

পশ্চিম উপকূলীয় সমভূমি কৃষিকাজে ততটা উন্নত না হওয়ায় এখানে কৃষি কাজের উপর ভিত্তি করে তেমন জনবসতি গড়ে ওঠেনি। (ব্যতিক্রম: মুম্বাই শহরে জনবসতি অনেক বেশি)

উপকূলসমূহের নাম

পূর্ব উপকূলীয় সমভূমি মূলত দুটি ক্ষুদ্র উপবিভাগ নিয়ে গঠিত : ১) উত্তর সরকার উপকূল, ২) করমন্ডল উপকূল।

পশ্চিম উপকূলীয় সমভূমি ৩ উপবিভাগ নিয়ে গঠিত : ১) কোঙ্কন উপকূল, ২) কর্ণাটক উপকূল এবং ৩) মালাবার উপকূল।

হ্রদ ও উপহ্রদ

পূর্ব উপকূলীয় সমভূমি জুড়ে বিভিন্ন ছোট বড় হ্রদের উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়। যেমন: পুলিকট, চিলকা (এশিয়ার বৃহত্তম লেগুন)

পশ্চিম উপকূলীয় সমভূমি জুড়ে বিভিন্ন ছোট বড় হ্রদ এবং উপহ্রদ দেখা যায়। তবে পূর্ব উপকূলীয় সমভূমির তুলনায় এখানে হ্রদ এবং উপহ্রদের সংখ্যা তুলনামূলকভাবে বেশি। যেমন: ভেম্বনাদ কয়াল, অষ্টমুদি কয়াল ইত্যাদি।

Post a Comment

0 Comments