পূর্ব উপকূলীয় সমভূমি এবং পশ্চিম উপকূলীয় সমভূমির মধ্যে পার্থক্য
বিষয় | পূর্ব উপকূলীয় সমভূমি | পশ্চিম উপকূলীয় সমভূমি |
অবস্থান | পূর্ব উপকূলীয় সমভূমি উত্তরে সুবর্ণরেখা নদী থেকে দক্ষিণে কন্যাকুমারীকা পর্যন্ত বিস্তৃত। | পশ্চিম উপকূলীয় সমভূমি উত্তরে কচ্ছের রণ থেকে দক্ষিণে কন্যাকুমারীকা পর্যন্ত বিস্তৃত। |
প্রশস্ত | পূর্ব উপকূলীয় সমভূমি পশ্চিম উপকূলীয় সমভূমির তুলনায় অধিক প্রশস্ত। মোটামুটি পূর্ব উপকূলীয় সমভূমি ১২০-৮০ কিলোমিটার পর্যন্ত বিস্তৃত। | পশ্চিম উপকূলীয় সমভূমি পূর্ব উপকূলীয় সমভূমির তুলনায় কম প্রশস্ত। মোটামুটি পশ্চিম উপকূলীয় সমভূমি ৬০-৮০ কিলোমিটার পর্যন্ত বিস্তৃত। |
বদ্বীপের অবস্থান | পূর্ব উপকূলীয় সমভূমিতে যে কটি নদীর মোহনা অবস্থান করে, তাদের বেশিরভাগেরই মোহনাতে বেশ বড় বদ্বীপ সৃষ্টি হয়েছে। | পশ্চিম উপকূলীয় সমভূমি তে যে কয়েকটি নদীর মোহনা অবস্থান করে, তাতে উল্লেখযোগ্য কোন বদ্বীপ গড়ে ওঠেনি। ব্যতিক্রম: নেত্রাবতী নদীর মোহনায় একটি ছোট বদ্বীপ গড়ে উঠেছে। |
উৎপত্তি | পূর্ব উপকূলীয় সমভূমি ও সমুদ্রের সঞ্চয় কার্যের ফলে গঠিত হয়েছে। | পশ্চিম উপকূলীয় সমভূমি প্রথম পর্যায়ে আন্দোলন এবং পরবর্তী পর্যায়ে দীর্ঘদিন ধরে সমুদ্রের সঞ্চয়ের ফলে ধরে গঠিত হয়েছে। |
সমুদ্রতল থেকে উচ্চতা | শুধুমাত্র সঞ্চয় কার্যের ফলে গঠিত হওয়া পূর্ব উপকূলীয় সমভূমির উচ্চতা সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে খুব একটা বেশি নয়। | ভূ আন্দোলন এবং সমুদ্রের সঞ্চয় কার্যের ফলে গঠিত হওয়া পশ্চিম উপকূলীয় সমভূমির উচ্চতা পূর্ব উপকূলীয় সমভূমির উচ্চতা অপেক্ষা বেশি |
বালিয়াড়ির অবস্থান | পূর্ব উপকূলীয় সমভূমি প্রায় সকল জায়গাতেই জায়গাতেই উঁচু-নিচু বালিয়াড়ি সৃষ্টি হয়েছে। | পশ্চিম উপকূলীয় সমভূমি তে পূর্ব উপকূলীয় সমভূমি অপেক্ষা বালিয়াড়ির সংখ্যা খুবই কম। ব্যতিক্রম: মালাবার উপকূলে বেশকিছু বালিয়াড়ি দেখা যায়। |
যোগাযোগ ব্যবস্থা | পূর্ব উপকূলীয় সমভূমি অধিক প্রশস্ত এবং এখানকার ভূপ্রকৃতি সমতল হওয়াতে এখানকার সর্বত্রই যোগাযোগ ব্যবস্থা বেশ উন্নত। | পশ্চিম উপকূলীয় সমভূমি অপেক্ষাকৃত কম প্রশস্ত এবং এখানকার ভূপ্রকৃতি তুলনামূলকভাবে বেশি বন্ধুর (উঁচু-নিচু)হওয়ার কারণে এখানকার যোগাযোগব্যবস্থা সর্বত্র উন্নত নয়। তবে, মুম্বাই, পানাজি (গোয়ার রাজধানী) ইত্যাদি শহরে যোগাযোগ ব্যবস্থা খুবই উন্নত। |
উপকূলের প্রকৃতি | পূর্ব উপকূলীয় সমভূমির উপকূলরেখা তুলনামূলকভাবে কম ভগ্ন। | পশ্চিম উপকূলীয় সমভূমির উপকূল রেখা তুলনামূলকভাবে বেশি ভগ্ন। |
বন্দরের সংখ্যা | পূর্ব উপকূলীয় সমভূমির উপকূল রেখা তুলনামূলকভাবে কম ভগ্ন হওয়ায় এখানে স্বাভাবিক বন্দরের সংখ্যা খুবই কম। ব্যতিক্রম: বিশাখাপত্তনম (আমাদের দেশের সর্ববৃহৎ স্বাভাবিক বন্দর) | পশ্চিম উপকূলের সমভূমির উপকূল রেখা তুলনামূলকভাবে বেশি ভগ্ন হওয়ায় এখানে অনেক বেশি স্বাভাবিক বন্দর গড়ে উঠেছে। |
উপকূলের দৈর্ঘ্য | পূর্ব উপকূল উত্তর দক্ষিণে মোটামুটিভাবে ১৫০০ (1500) কিলোমিটার দীর্ঘ। | পশ্চিম উপকূল উত্তর দক্ষিণে মোটামুটিভাবে ১৬০০ (1600) কিলোমিটার দীর্ঘ। |
কৃষিকাজ ও জনবসতি | পূর্ব উপকূলীয় সমভূমি কৃষিকাজে উন্নত হওয়ায় এখানে সর্বত্রই জনবসতি গড়ে উঠেছে। | পশ্চিম উপকূলীয় সমভূমি কৃষিকাজে ততটা উন্নত না হওয়ায় এখানে কৃষি কাজের উপর ভিত্তি করে তেমন জনবসতি গড়ে ওঠেনি। (ব্যতিক্রম: মুম্বাই শহরে জনবসতি অনেক বেশি) |
উপকূলসমূহের নাম | পূর্ব উপকূলীয় সমভূমি মূলত দুটি ক্ষুদ্র উপবিভাগ নিয়ে গঠিত : ১) উত্তর সরকার উপকূল, ২) করমন্ডল উপকূল। | পশ্চিম উপকূলীয় সমভূমি ৩ উপবিভাগ নিয়ে গঠিত : ১) কোঙ্কন উপকূল, ২) কর্ণাটক উপকূল এবং ৩) মালাবার উপকূল। |
হ্রদ ও উপহ্রদ | পূর্ব উপকূলীয় সমভূমি জুড়ে বিভিন্ন ছোট বড় হ্রদের উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়। যেমন: পুলিকট, চিলকা (এশিয়ার বৃহত্তম লেগুন) | পশ্চিম উপকূলীয় সমভূমি জুড়ে বিভিন্ন ছোট বড় হ্রদ এবং উপহ্রদ দেখা যায়। তবে পূর্ব উপকূলীয় সমভূমির তুলনায় এখানে হ্রদ এবং উপহ্রদের সংখ্যা তুলনামূলকভাবে বেশি। যেমন: ভেম্বনাদ কয়াল, অষ্টমুদি কয়াল ইত্যাদি। |
0 Comments