সমাস | সমাস কাকে বলে ? | সমাস কী ? | সমাসের প্রকারভেদ ?

সমাস

সমাস কাকে বলে?

পরস্পর সম্পর্কযুক্ত দুই বা তার বেশি পদের এক পথে রূপান্তরিত হওয়াকে সমাস বলা হয়।

যেমন : 'যিনি রাজা তিনিই ঋষি' - এখানে প্রতিটি পদ‌ই অর্থ সম্বন্ধযুক্ত,  এইমতো সম্বন্ধযুক্ত পদগুলিকে সংক্ষেপে একটি শব্দের মধ্যে আমরা এই ভাবে প্রকাশ করতে পারি - রাজর্ষি।

সমাস ব্যবহার করব কেন / সমাসের প্রয়োজনীয়তা :
  • ১) দুই বা ততোধিক শব্দকে একসঙ্গে একটি শব্দে পরিণত করলে লেখার বা বলার সময় সংক্ষিপ্ত হয়।
  • ২) ভাষার মাধুর্য বৃদ্ধি পায়।
  • ৩) নতুন শব্দ তৈরি হয়।

এখন আমরা সমাস সংক্রান্ত বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পরিভাষা নিয়ে আলোচনা করব:


ব্যাসবাক্য:

  • যে বাক্যের দ্বারা সমাসবদ্ধ পদের অর্থ বিশ্লেষণ করা হয় তাকে ব্যাসবাক্য বলে।

  • সমাসবদ্ধ পদ কে বিশ্লেষণ করলে যে বাক্য পাওয়া যায় তাকে ব্যাসবাক্য বলে।

যেমন : মন রূপ মাঝি - মানমাঝি ; আলোচ্য উদাহরণটিতে "মন রূপ মাঝি" হল ব্যাসবাক্য।


সমস্যমান পদ:

ব্যাসবাক্যের অন্তর্গত যে সকল পদের সাহায্যে সমাসবদ্ধ পদ গঠিত হয়, তাদের সমস্যমান পদ বলা হয়। 

যেমন : মন রূপ মাঝি - মানমাঝি ; আলোচ্য উদাহরণটিতে 'মন' এবং 'মাঝি" হল সমস্যমান পদ।


পূর্বপদ:

ব্যাসবাক্যের অন্তর্গত সমাসবদ্ধ পদের যে পদটি পূর্বে অবস্থান করে বা ব্যাসবাক্যের মধ্যে আগে থাকে তাকে পূর্বপদ বলা হয়।

যেমন : মন রূপ মাঝি - মানমাঝি ; আলোচ্য উদাহরণটিতে 'মন' পূর্বপদ।


পরপদ:

ব্যাসবাক্যের অন্তর্গত সমাসবদ্ধ পদের যে পদটি পরে অবস্থান করে বা ব্যাসবাক্যের মধ্যে পরে থাকে তাকে পূর্বপদ বলা হয়।

যেমন : মন রূপ মাঝি - মানমাঝি ; আলোচ্য উদাহরণটিতে 'মাঝি' পরপদ।


সমাসের শ্রেণীবিভাগ:

    বাংলা ব্যাকরণ এ সমাসকে বিভিন্ন ভাগে ভাগ করা হয়। (যদিও এই নিয়ে বৈয়াকরণিকদের মধ্যে মতভেদ রয়েছে।) তবুও আধুনিক বাংলা ব্যাকরণ অনুযায়ী সমাজকে মোটামুটি ৯ টি ভাগে ভাগ করা যায়

যথা:
  • দ্বন্দ্ব সমাস
  • কর্মধারয় সমাস
  • তৎপুরুষ সমাস
  • বহুব্রীহি সমাস
  • দ্বিগু সমাস
  • অব্যয়ীভাব সমাস
  • নিত্য সমাস
  • অলোপ সমাস
  • বাক্যাশ্রয়ী সমাস
আবার, চতুষ্টয়বাদীদের মতে সমাস চার প্রকার।
যথা -
  • অব্যয়ীভাব সমাস
  • তৎপুরুষ সমাস
  • বহুব্রীহি সমাস
  • এবং দ্বন্দ্ব সমাস
সমাস সংক্রান্ত আলোচনায় আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো -

সমস্যমান সহায়ক পদঃ

ব্যাসবাক্যে  অনেক সময় সমস্যমান পদ ছাড়াও অন্যান্য কিছু পদ থাকে / অবস্থান করে, এদেরকে সমস্যমান সহায়ক পদ বলা হয়।

যেমন : মন রূপ মাঝি - মানমাঝি ; আলোচ্য উদাহরণটিতে 'রূপ' হল সমস্যমান সহায়ক পদ ।


সন্ধি ও সমাসের মধ্যে পার্থক্য:

সন্ধি

সমাস

সন্ধিতে বর্ণের সঙ্গে বর্ণের মিলন হয়।

সমাসে পদের সঙ্গে পদের মিলন হয়।

সন্ধিতে প্রত্যেকটি পদের অর্থ অক্ষুণ্য থাকে।

সমাসে কখনও কখনও উভয় পদের, কখনও পরপদের, কখনও পুর্বপদের আবার কখনও অন্য পদের অর্থ প্রাধান্য পায়।

সন্ধিতে যে পদের মিলন হয় তাদের মধ্যে অর্থের সম্পর্ক সম্পর্ক থাকতেও পারে আবার নাও থাকতে পারে।

সমাসে যে পদগুলির মিলন হয় তাদের মধ্যে সবসময় অর্থের সম্পর্ক থাকে।

সন্ধিতে পদের পারমপর্য রক্ষিত হয়।

সমাসে কখনও কখনও পদের পারমপর্য রক্ষিত হয় না। কখনও পুর্বপদ পরে বসে আবার কখনও পরপদ আগে বসে।


Post a Comment

0 Comments